Narration - 4

কবি যেদিন চলে গেলেন সেদিনের তারিখ ছিল ২২শে শ্রাবণ
তাঁরও জীবনে আরেক ২২শে শ্রাবণ এসেছিল এক পরম যন্ত্রণার লগ্ন হয়ে
প্রথম দুই কন্যাকে হারিয়ে ছোটো মেয়ে মীরার ওপর কবির ছিল গভীর ভালোবাসা
সেই মীরার ছেলে নীতিন্দ্রনাথ, ১৯৩২ সালে তার বয়েস কুড়ি
সেই তরুণ দৌহিত্রকে কবি জার্মানিতে পাঠিয়েছিলেন ছাপার কাজ শিখতে
সেখানে ধরা পড়লো নীতিন্দ্রনাথ যক্ষায় আক্রান্ত
কবি উদ্বিগ্ন ব্যাকুল হলেন একমাত্র দৌহিত্রের অসুস্থতায়
রবীন্দ্রনাথের অকৃত্রিম বন্ধু অ্যান্ড্রুজ খবর পেয়ে ছুটে গেলেন নীতুর কাছে
নীতুও খুব খুশি তাঁকে পেয়ে, এলেন মীরা দেবী
কিন্তু সব আশা চূর্ণ করে ২২শে শ্রাবণ, ৭ই অগাস্ট, ১৯৩২
মৃত্যু এসে স্পর্শ করল নীতুকে

কিন্তু এই বেদনার আঘাত কী পরম শক্তিতে জয় করলেন রবীন্দ্রনাথ
কোনো কাজে, কোনো আনুষ্ঠানিকতায় সে শোক প্রকাশ পেতে দিলেন না
মীরা দেবীকে লিখলেন, "নীতুকে খুব ভালোবাসতুম
তাছাড়া তোর কথা ভেবে প্রচণ্ড দুঃখ চেপে বসেছিল বুকের মধ্যে
কিন্তু সর্বলোকের সামনে নিজের গভীরতম দুঃখকে ক্ষুদ্র করতে লজ্জা করে
অনেকে বললে, এবার বর্ষা মঙ্গল বন্ধ থাক আমার শোকের খাতিরে
আমি বললাম, সে হতেই পারে না, আমার শোকের দায় আমিই নেব
বাইরের লোকে কী বুঝবে তার মানেটা"

ওই চিঠিতেই লিখলেন, "যে রাত্রে সমী গিয়েছিল সে রাত্রে সমস্ত মন দিয়ে বলেছিলুম
বিরাট বিশ্বসত্তার মধ্যে তার অবাধ গতি হোক
আমার শোক তাকে একটুও যেন পিছনে না টানে
যা ঘটেছে তাকে যেন সহজে স্বীকার করি
যা কিছু রয়ে গেল তাকেও যেন সম্পূর্ণ সহজ মনে স্বীকার করতে ত্রুটি না ঘটে"



Credits
Writer(s): Sukanta Bhattachariya
Lyrics powered by www.musixmatch.com

Link