Narration - 9

"ফুরায় যা তা ফুরায় শুধু চোখে
অন্ধকারের পেরিয়ে দুয়ার যায় চলে আলোকে"

তবু অফুরান সেই মহাজীবন
এই বাস্তব জীবন থেকে যেদিন স্মৃতিলোকে উত্তীর্ণ হলেন
সেদিন সকলের মনে হয়েছিল
এ অন্ধকার পার হব কী করে?
এ তো কেবল প্রিয়জনের মৃত্যু নয়
এ যে সমস্ত জীবনের আলো নিভে যাওয়া

যারা রবীন্দ্রনাথের জীবনের শেষ ক'টি দিন
সারাক্ষণ তাঁর কাছে কাছে থেকেছেন
সেবা করেছেন, তাঁর স্নেহে সিক্ত হয়েছেন
তাদের মধ্যে একজন তাঁর পুত্রবধূ প্রতিমা দেবী
পরম স্নেহের মামণি, "নির্বাণ" গ্রন্থে লিখেছেন

"আষাঢ় মাস পড়তেই বাবামশাই খোলা আকাশে বর্ষার রূপ দেখবার জন্য উতলা হয়ে উঠলেন
এখন তাকে উত্তরায়ণের দোতলায় নিয়ে আসা হলো
রানী মহলানবিশও এই সময় শান্তিনিকেতনে এসে বাবামশাইয়ের সেবায় যোগ দিয়েছিলেন
এক সময় এক দিনের জন্য কলকাতা থেকে ইন্দুবাবু, ডাক্তার ইন্দ্রমাধব বসু
বিধানবাবু, ডাক্তার বিধানচন্দ্র রায়
ও ললিতবাবু, ডাক্তার ললিতমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় এলেন
সঙ্গে ছিলেন জ্যোতিবাবু, ডাক্তার জ্যোতিপ্রকাশ সরকার
তারা ওঁকে দেখেশুনে পরীক্ষা করে স্থির করলেন শ্রাবণমাসেই অপারেশন হবে"

"বাবামশাইয়ের মনে মনে তার অবসানের একটি কাল্পনিক ছবি গড়ে উঠেছিল
সেই ভাবের কথাও তিনি বলতেন
যেমন করে ফুলপাতা খসে পড়ে, বৃদ্ধগাছটি যেমন করে ধীরে ধীরে শুকিয়ে আসে
তিনি ভেবেছিলেন তেমনি করেই একদিন প্রকৃতির কোলে ঝরে পড়বেন"

"আসন্ন বর্ষের শেষে পুরাতন আমার আপন
শ্লথবৃন্ত ফলের মতন ছিন্ন হয়ে আসিতেছে
অনুভব তারি আপনারে দিতেছে বিস্তারি
আমার সকলকিছু-মাঝে"



Credits
Writer(s): Sukanta Bhattachariya
Lyrics powered by www.musixmatch.com

Link